রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৫ অপরাহ্ন
কাউখালী প্রতিনিধি॥ পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় এক গৃহবধুর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরের পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া পৌর শহরের কানুয়া মহল্লার শিরিন মঞ্জিল থেকে জান্নাতুল ফেরদৌস মুনমুন (২৮) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে ভান্ডারিয়া থানা পুলিশ। মুনমুন কাউখালী উপজেলার কেউন্দিয়া গ্রামের আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের মেয়ে। তাদের তাসমিয়া নামের সাড়ে ৩ বছরের একটি কন্য সন্তান আছে।
এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তার (নিহত মুনমুনের ) স্বামী সুমন হাওলাদার, শ্বাশুরী শিরিন বেগম, ননদ নুপুর আক্তারকে আটক করেছে। আজ সকালে সুমন মোবাইলে মুনমুনের ছোটবোন সিনিগ্ধা কে জানায় মুনমুন দরজা খুলছে না। ভিতরে কোন সাড়াশব্দ নেই।
মুনমুনের খালা নিপা আক্তার জানান, আমার শশুর বাড়ি ভান্ডারিয়ায়, সিনিগ্ধা আমাকে মোবাইলে জানালে আমি সুমনকে কল করি। তখন সুমন জানায় আপনারা দ্রুত আসেন, তার পরে দরজা খুলব। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি পুলিশের সহযোগিতায় লাশ নামানো হয়ে গেছে।
মুনমুনের মা মমতাজ বেগম জানান, পাঁচ বছর আগে ভান্ডারিয়া পৌর এলাকার ৮ নং ওয়ার্ডের কানুয়া গ্রামের মোঃ সোহরাব হোসেন হাওলাদারের ছেলে সুমন হাওলাদারের সাথে মুনমুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে প্রায়ই মুনমুনকে মারধোর করতো এবং পরোকীয়া প্রেম আছে বলে জানিয়ে ছিল মুনমুন।
এ সময় তিনি আরো বলেন, তার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
সুমনের দুলাভাই কবির বেপারী জানান, দাম্পত্য জীবনে কলহে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটতে পারে। পুলিশ ও স্থানীয় কাউন্সিলর এসে দরজা ভেঙ্গে ভেন্টিলেটর থেকে ঝুলন্ত মৃত দেহ উদ্ধার করেছে। ঘরে প্রবেশের একটিই মাত্র দরজা। এটি হত্যাকান্ড বলার কোন সুযোগ নেই।
৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মানিক হাওলাদার জানান, দরজা ভিতর থেকে দেয়া ছিলো, ভেঙ্গে আমরা ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পাই।
ভান্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মাসুমুর রহমান বিশ্বাস জানান, লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এটি আত্মহত্যা না কি হত্যা তদন্ত শেষে জানা যাবে। এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মুনমুনের স্বামী সুমন সহ ৩ জনকে আটক করা হয়েছে।
মুনমুনের ৪ বছরের শিশু কন্যা জানান, তার বাবা তার মাকে লাঠি দিয়ে মেরেছে এবং গলায় দড়ি দিয়ে বেঁধেছে। মুনমুনের মা মমতাজ বেগম এবং বাবা জাহাঙ্গীর ডাকুয়া দাবি করেন তার মেয়ের আত্মহত্যা করতে পারে না। কয়েক মাস পূর্বে তার জামাই গলায় ফাঁসি দিয়ে মুনমুনকে হত্যার চেষ্টা করেছে।
তারপরে ৪ মাস মুনমুন কাউখালীতে বাবার বাড়ি ছিল। ৫ মাস আগে মুনমুনের শ্বশুর-শাশুড়ি কাউখালীতে এসে পুত্রবধূকে নিয়ে যায়। শর্ত ছিল আর কোনদিন অত্যাচার করবে না। এর আগেও একটি মেয়েকে বিয়ে করেছিল সুমন। যা সে গোপন রেখেছিল এবং বর্তমানে আবার বিয়ে করার জন্য অনুমতি চাওয়ার ফলে প্রায়ই স্বামী-স্ত্রী ঝগড়াঝাটি হয়। আমরা ন্যায়বিচার চাই তদন্ত করে আমার মেয়ের হত্যাকারীদের ফাঁসির জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাই।
Leave a Reply